পিডিএফ বুকঃ | বাংলার মুসলমানদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহাসিক দলিল |
লেখকঃ | মুহাম্মদ সিরাজ মান্নান |
প্রকাশনীঃ | ইসলামিক ফাউন্ডেশন |
উপস্থাপনায়ঃ | বাগী কুঞ্জালয় পাঠাগার |
কৃতজ্ঞতাঃ | কামাল আহমেদ বাগী |
বাংলার মুসলমানদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহাসিক দলিল বই প্রসঙ্গ
একটি জাতির ইতিহাস যত প্রাচীন ও ঐতিহ্য সমৃদ্ধ, সে জাতির জাতীয় সম্ভার ভিত্তিও তত দৃঢ ৷ আজকের বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করলেও এটা স্বাধীনতার ইতিহাস যেমন প্রাচীন, আবার স্বাধীনতা হারানোর ইতিহাসও তেমন পুরনো আর স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে ইতিহাস ভরপুর ৷ তাই দেখা যায় স্বাধীনতা হারিয়েছে আবার সেটা পুনরুদ্ধ সংগ্রামের তারা বারবার আত্মনিয়োগ করেছে ৷ বিসর্জন দিয়েছে নিজেদের অজস্র জান মাল ৷ ফলে জাতির ইতিহাসে ঘটেছে কালের আবর্তন ৷ কোন কাল এসেছে স্বাধীনতার সোনালী স্বপ্নের আশীর্বাদ নিয়ে, আবার কোন কাল আখিরীভূত হয়েছে স্বাধীনতার গভীর অন্ধকারের প্রতিভূ রুপে ৷
আরও বই ডাউনলোড করুনঃপলাশী ট্রাজেডির ইতিবৃত্ত pdf
কোরআন শরীফ - মোহাম্মদ আকরম খাঁ
নওয়াব পরিবারের ডায়েরিতে ঢাকার সমাজ ও সংস্কৃতি
অষ্টাদশ শতাব্দীর দ্বিতীয় অব্দে শুরু হয়েছিল এমনই একটি পরাধীনতার মলিনলিপ্ত যুগের ৷ কালের আবহ ছুটে চলে অবিরাম গতিতে ৷ জাতীয় জীবনে বারবার দেখা দেয় স্বাধীনতার স্পৃহা ৷ নবাব মীর কাসিম, ফকির মজনু শাহ ঝাঁপিয়ে পড়েন স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারে ৷ কিন্তু ব্যাপক গণ সমর্থনের অভাবে এই সংগ্রাম সফলতার মুখ দেখেনি ৷ তারপরেও ১৮৫৭ সালের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও এই দেশের মানুষ এর স্বাধীনতা চেতনা চেতনারই বহিঃপ্রকাশ ৷ তারপর আবার যুগের হাওয়া পাল্টে যায় ৷ স্বাধীনতার সংগ্রামের ধারায় পরিবর্তনের জোয়ার আসে ৷ সমস্ত সংগ্রামের স্থলে শুরু হয় গণ আন্দোলন ৷
ব্রিটিশ বিরোধী খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলন এবং সর্বশেষ কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ কর্তৃক নিয়ম তান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরিচালিত স্বাধীনতা সংগ্রাম, বা ব্রিটিশ সরকার স্বাধীনতা সংগ্রামকে প্রশমিত করবার জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংস্কার আইন পাস করে বিশেষ করে ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন পাস করে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন চালু করায় বাংলার মুসলমানদের মনে দেশ শাসন তাদের গৌরব পুনরুদ্ধার করার চিন্তা বাসনা সৃষ্টি হয় ৷ এ সময় হিন্দু সংখ্যাগুরু প্রদেশগুলোতে কংগ্রেসী শাসনের স্বরূপ দেখে তারা ভীষণভাবে শঙ্কিত হয়ে পড়ে, এবং হিন্দুদেশ হওয়া পুরোপুরি ভাবে বাংলাকে স্বাধীন করার জন্য এক মরণপন নিয়মতান্ত্রিক সংগ্রামে লিপ্ত হয় ৷ এই সংগ্রাম ১৯৩৬ সাল হতে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত চলে ৷ যদিও তারা এই সংগ্রাম পরিচালনা করেছিল একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার জন্য ৷ কিন্তু হিন্দু ও ব্রিটিশদের যৌথ বিরোধিতার জটিল আবর্তে পড়ে বাংলাদেশ পুরোপুরি স্বাধীন হলো না ৷ পাকিস্তান নামক দেশটির সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে বাংলা আবার অনেকটা কলোনির রূপ ঐ ধারণ করে, এবং তাকে পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করতে আরেকটি রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে লিপ্ত হতে হয় ৷
আরও বই ডাউনলোড করুনঃঅন্ধকূপ হত্যা রহস্য pdf
আমাদের একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম
৭০ এর দশকে এই সংগ্রাম প্রথমে পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি হিসেবে শুরু হলেও ক্রমান্বয়ে এটা একটি পূর্ণ স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপান্তরিত হয় এবং ১৯৭১ সালের মার্চ হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সংগ্রামের পর বাংলাদেশ একটি পূর্ণ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে একটি সদস্যের মর্যাদা লাভ করে ৷
এখানে একটি বিষয় সুস্পষ্ট করে বলা প্রয়োজন যে, বিংশ শতাব্দীর প্রথমে স্বাধীনতা সংগ্রাম বাংলাদেশের জন্য পূর্ণ স্বাধীনতা বয়ে না আনলেও পাকিস্তানের একটি প্রদেশ হিসাবে এটার অন্তর্ভুক্তির পর্যায়ে নিয়ম তান্ত্রিক সংগ্রাম সংঘটিত হয়েছিল ৷ বিশেষ করে ১৯৩৬ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত তার ঐতিহাসিক গুরুত্ব আজকের স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্য কোন অংশে কম নয় ৷ কেননা সেদিন যদি বাংলার মুসলমানেরা ভারত থেকে আলাদা হয়ে একটি স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম না করতেন তাহলে বাংলাদেশ বড়জোর ভারতের অধীনে একটি অঙ্গরাজ্যের মর্যাদা লাভ করত ৷ কোনোভাবেই একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ হিসাবে আজ এটার অভ্যুদয় হত না ৷
কাজেই ১৯৩৬ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত বাংলার মুসলমানদের স্বাধীনতার জন্য পরিচালিত সংগ্রামের ইতিহাস আজকের স্বাধীন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৷ স্বাধীনতা সংগ্রামের এই গুরুত্ব পূর্ণ পর্বের ঐতিহাসিক দলিলগুলো এই বইতে সন্নিবেশ করা হয়েছে ৷